একজন জুনিয়র ডাক্তারের বিরুদ্ধে কলকাতা মেডিকেল কলেজে গভীর উদ্বেগজনক অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে, অভিযোগক্রমে যিনি বিয়ের প্রতিশ্রুতি প্রদান করে এক তরুণীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন(Doctor Sultan Faruk Mandal)। উল্লেখ্য, উক্ত তরুণীকে বাধ্যতামূলকভাবে তিনবার গর্ভপাতের জন্য উৎসাহিত করা হয়েছে। পাটুলি মহিলা থানায় এক বন্ধুর অভিযোগের পরবর্তীতে, পুলিশ কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত চিকিৎসক সুলতান ফারুক মণ্ডলকে রাত্রে মেডিকেল কলেজের বাহির হতে গ্রেপ্তার করেন। তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও বাধ্যতামূলক গর্ভপাত সংক্রান্ত সহ বিভিন্ন আইনি ধারার আওতায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্র অনুযায়ী, উক্ত জুনিয়র ডাক্তার (Doctor Sultan Faruk Mandal) ও অভিযোগকারী তরুণীর পরিচয় ২০২০ সালে সামাজিক মাধ্যমের মাধ্যমে গড়ে ওঠে। সুলতান ফারুক উক্ত তরুণীকে বন্ধুত্বের অনুরোধ প্রেরণ করলে তিনি তা গ্রহণ করেন। কয়েকবার কথোপকথনের পর তাঁদের মোবাইল নম্বর বিনিময় হয়, ফলে একটি প্রণয়গত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। জুনিয়র ডাক্তার তাঁকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন, যা অভিযোগকারী তখনকার মধ্যে কেবল একটি প্রতিশ্রুতি হিসেবে গ্রহণ করেন। ২০২২ সাল থেকে তাঁদের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে, ফলে তরুণী গর্ভবতী হন। তিনি দাবি করেন যে, উক্ত চিকিৎসক ভিটামিনের সঙ্গে অন্যান্য ওষুধ মিশ্রিত করে গর্ভস্থ শিশু নষ্ট করতে বাধ্য করেন। এর ফলে তাঁদের সম্পর্ক বিগড়ে যায়। ২০২৪ সালে তাঁরা আবার একে অপরের কাছাকাছি আসেন এবং ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক পুনরায় গড়ে তোলেন, যার ফলে তরুণী পুনরায় গর্ভবতী হন এবং বাধ্যতামূলক গর্ভপাত করতে বাধ্য হন। ২০২৫ সালের প্রথমে একই প্রক্রিয়া পুনরাবৃত্তি ঘটে। তাঁরা বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণেও গেছেন। তিনবার গর্ভপাতের পর তরুণী বিয়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে শুরু করেন, কিন্তু জুনিয়র ডাক্তার বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে এটি এড়িয়ে যান এবং অবশেষে মোবাইল ফোনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এর পর তিনি চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে পাটুলি মহিলা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

তদন্তের কার্যক্রমে পুলিশ জানতে পারেন যে, উক্ত জুনিয়র ডাক্তার (Doctor Sultan Faruk Mandal) মেডিকেল কলেজের হোস্টেলে বসবাস করছেন। তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ হোস্টেল বা হাসপাতাল থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করতে আগ্রহী ছিলেন না এবং তাঁর গতিবিধি নজরদারি করা হচ্ছিল। পূর্বে যাদবপুর এলাকায় একজনের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে তিনি ক্ষণিকের জন্য গ্রেপ্তারি এড়িয়ে যান। তবে বৃহস্পতিবার তিনি মেডিকেল কলেজের বাহিরে বউবাজার এলাকায় উপস্থিত থাকার সময় গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকালে তিনি পুলিশকে জানান যে তিনি কোনো গর্ভপাতের কারণ হননি, তবে শারীরিক সম্পর্কের বিষয়টি স্বীকার করেন। আদালতে উপস্থাপিত হলে তাঁর আইনজীবী শ্রী সুব্রত সরদার জানান যে, পুলিশের এফআইআর-এ “অ্যাবরশন” শব্দটি উল্লেখিত নেই; বরং “মিসক্যারেজ” উল্লেখ রয়েছে, যা নির্দেশ করে যে বাধ্যতামূলক গর্ভপাত ঘটেনি। তিনি প্রশ্ন তুলেন যে, ওষুধের স্ট্রিপ কোথায় এবং ২০২২ সাল থেকে ঘটনা ঘটার পর এত দেরিতে জামাকাপড় পরীক্ষা বা ঘটনা পুনর্নির্মাণ কীভাবে সম্ভব, যা তিনি হাস্যকর মনে করেন। তিনি তাঁর মক্কেলের জামিনের আবেদন করেন। অপরদিকে, সরকারি আইনজীবী শ্রী সৌরীন ঘোষাল জামিনের বিরোধিতা করেন, দাবি করে যে তরুণীকে বাধ্যতামূলকভাবে ওষুধ প্রদানের প্রমাণ রয়েছে, এবং চিকিৎসা রেকর্ড নির্দেশ করে যে গর্ভস্থ শিশু ওষুধের প্রভাবে নষ্ট হয়েছে। শুনানি শেষে বিচারক সুলতান ফারুককে ১১ জুন পর্যন্ত জেল হেফাজতে প্রেরণ করেন।
ফীচার ছবি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে নির্মিত।
